দীর্ঘদিন ধরে নিউপোর্টের এক সরকারি
বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করছেন পিটার। কিন্তু মাত্র চার বেডরুমের এই বাড়িতে
এতগুলো মানুষের থাকাটা মোটেই আরামদায়ক নয়। এ নিয়ে গত মার্চ মাসে
মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগে সোচ্চার হন পিটার। তখনই তার ১৫ নারী সঙ্গিনী আর
২৬ ছেলেমেয়ের খবর সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়। এর আগ পর্যন্ত তিনি তার ১০
স্ত্রী এবং মাত্র ১৮ ছেলেমেয়ের কথাই কেবল স্বীকার করতেন। এদের জন্যই তিনি
কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের কাছে ছয় কামরা বিশিষ্ট একটি করমুক্ত বাড়ির জন্য দেন
দরবার করে আসছিলেন।
তবে ঠ্যালায় পড়ে নিজের ১৪ ছেলে এবং ১২
জন মেয়ের কথা স্বীকার করেছেন পিটার। তাদের জন্ম ১৫ জন নারীর গর্ভে।সম্প্রতি
ব্রিটেনের চ্যানেল ৫ টেলিভিশনে তার ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রচারিত হয়।
ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকাকে দেয়া
সাক্ষাৎকারে পিটার বলেন,’২৬ জন সন্তান সন্ততির দেখভাল করাটা অত্যন্ত কঠিন
কাজ, যখন তাদের জন্ম ভিন্ন ভিন্ন মায়েদের ঘরে।’
যুক্তরাজ্যে বেনিফিট সিস্টেমের আওতায়
পিটার সপ্তাহে আটশ ডলার ভাতা পেয়ে থাকেন।বর্তমান বাড়িটিকে প্রিজন সেল
হিসেবে উল্লেখ করে এখনো একটি বড় মাপের বাসভবনের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলের
কাছে ধর্না দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তার এই বিশাল পরিবারের কথা জানাজানি
হওয়ার পর দেশের এসব ‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত’দের নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
চ্যানেল ফাইভে প্রচারিত ডকুমেন্টারিতে
এই তথ্যই তুলে ধরা হয়। তারা দাবি করেন, এসব বেকার বাবামায়েরা ছেলেমেয়েদের
অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে সহজ জীবনযাপন করে আসছেন। সাবেক টরি দলের এক
সাবেক এমপি অ্যান উইডেকোম্বে পিটারকে ব্রিটেনের সবচেয়ে অথর্ব বাবা হিসেবে
উল্লেখ করেছেন।
গত বিশ বছর ধরে বেকার পিটার সরকারি
ভাতায় সপরিবারে বহাল তবিয়তে দিন গুজরান করে আসছেন। পিটার এক নন।
যুক্তরাজ্যে এরকম বহু পরিবার রয়েছে। বলা বাহুল্য এসব পরিবারের সদস্য
সংখ্যাও যুক্তরাজ্যের গড় পড়তা পরিবারগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। কেবল বেশি
পরিমাণ ভাতা পাওয়ার জন্যই তারা পরিবার বড় করতে থাকে। সুবিধাপ্রাপ্ত এসব
পরিবারের সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ কত হওয়া উচিত সরকার তা নির্দিষ্ট করে
দেয়নি। তবে এই খাতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত সাধারণ মানুষ। এছাড়া
করদাতারাও এখন ত্যক্ত বিরক্ত। যুক্তরাজ্যে বর্তমানে বেনিফিট খাতে ১৬৭.৭
বিলিয়ন ইউরো ব্যয় হয়ে থাকে। ২০১৮-১৯ সাল নাগাদ এ ব্যয় বেড়ে ১৭১.৫ ইউরোতে
গিয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment