স্থানীয় হেরাল্ড দৈনিকে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে আল জাজিরা।
মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়ায় খ্রিস্টান
সম্প্রদায়ের জন্য ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে
সরকার। এই নিষেধাজ্ঞাটি তুলে নেয়ার জন্যই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন সে
দেশের ক্যাথলিক চার্চ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুত্রজায়ার আদালত তাদের ওই আবেদন
খারিজ করে দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি আরিফিন জাকারিয়া সোমবার রায় ঘোষণার সময়
বলেন,‘তারা সরকারি নির্দেশ সংশোধনের জন্য আপিল করেছিলেন। কিন্তু আমাদের
এতে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। তাই তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়া হল।’
রায় ঘোষণার পর গির্জার আইনজীবী এস সেলভারাজাহ আক্ষেপ করে বলেন, এই রায়ের ফলে এখানকার অমুসলিমরা আর এ শব্দটি ব্যবহার করতে পারবে না।
সোমবার এই রায় ঘোষণার সময় আদালতের বাইরে
সমাবেত হয়েছিল শত শত বিক্ষুব্ধ মুসলমান। তাদের ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে গোটা
আদালত প্রাঙ্গণ কেঁপে ওঠছিল।
মালেয়েশিয়ায় আল্লাহ শব্দ নিয়ে বিরোধের
সূচনা গত সাত বছর আগে। ২০০৭ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেখানকার মালয়ভাষী
ইংরেজি দৈনিক হেরাল্ডকে দেয় আরবি শব্দ ব্যবহারের অনুমতি প্রত্যাখ্যান করে
নেয়। কারণ হিসেবে সরকারি কর্মকর্তারা জানান, এই শব্দটি অমুসলিম পুস্তকে
ব্যবহৃত হলে মুসলমানরা বিভ্রান্ত হতে পারে এবং তাদের মধ্যে ধর্মান্তরিত
হওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করা
মালয়েশিয়ায় অপরাধ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশকে
চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে স্থানীয় গির্জা কর্তপক্ষ এক নিম্ন আদালতে মামলা
দায়ের করেন। তাদের যুক্তি ছিল, মালয় ভাষায় লেখা বাইবেল এবং অন্যান্য
সাহিত্যগুলো গত কয়েক দশক ধরে আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করে আসছে। তাদের পক্ষে
রায় দেন আদালত।
এ রায়কে কেন্দ্র করে তখন মুসলমান ও
খ্রিস্টানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দাঙ্গা চলাকালে অনেক
ঘরবাড়ি ও উপাসনালয়ে আগুন দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে অমুসলিমদের জন্য ‘আল্লাহ’
শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে মালয়েশিয়া সরকার।
এই নির্দেশ বাতিলের দাবিতে গত অক্টেবর মাসে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছিল খ্রিস্টানরা।
No comments:
Post a Comment