নাম-
সুজন। তার রিক্সায় গুলশান থেকে বাসায় এসেছি। তার কাছে ভাড়া জানতে চাইলে সে
প্রচলিত ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া চাইলো। আমি অবাক হলেও কিছু না বলে তার রিক্সায়
চড়লাম। মাঝপথে একটা ফোনের রিং শুনলাম। তারপর দেখলাম সে লুঙ্গির প্যাঁচ
থেকে মোবাইল বের করে খুব কোমল আর
স্নেহাদ্র গলায় কার সঙ্গে যেন কথা বলছে। তাকে বললাম রিক্সা একপাশে থামিয়ে
কথা বলতে, সে তাই করলো। টুকরো টুকরো ভেসে আসছিল কানে "আব্বা, দুপুরে কি দি
খাইসো..... হ, শুক্কুরবারে আমু....... তোমার লিগা কি আনুম..... আইচ্ছা
শুক্কুরবারে নিয়া আমু.......।" জানতে চাইলে বললো তার তিন বছর বয়সী ছেলের
সাথে কথা বলছিল। ছেলে একটা বল নিয়ে যেতে বলেছে। জিজ্ঞেস করলাম কম ভাড়া কেন
চেয়েছে। বললো কম ভাড়া চাইলে কম সময়ে বেশি সংখ্যক ট্রিপ দেয়া যায়, তাতে
পরিশ্রম বেশি হলেও আয় একটু বেশি হয়। ছেলের জন্য প্রতিবার বাড়ি যাওয়ার সময়
ভাল-মন্দ কিছু কিনে নিয়ে যেতে পারে। আমার মনে পড়ল আমার ছেলের কথা। মনে পড়ল
কিছুদিন আগে অনেকদিনের জন্য চট্টগ্রাম থাকা অবস্থায় তাকে দেখতে না পেয়ে
কেমন মন কাঁদতো! নামার সময় তাকে প্রচলিত ভাড়াটাই দিলাম। তারপর একটা সাধারন
মানের বল কেনার মত টাকা দিয়ে তার এই ঘামে ভেজা মায়াময় মুখের ছবিটা তুলে
বাসায় চলে এলাম। ভাবতে থাকলাম, সন্তানের জন্য পিতাদের এ মায়া বড়
অদ্ভুত.......
.
No comments:
Post a Comment